এসি মেশিন -১
ট্রান্সফর্মারের গঠন ও কার্যপ্রণালী
ভূমিকা: বর্তমান বিশ্বে বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চালন ও বন্টন (Transmission and distribution) ব্যবস্থায় ট্রান্সফর্মারের অবদান অপরিসীম। ইহা মূলত: একটি স্থির প্রকৃতির ডিভাইস। এ ডিভাইসের সাহায্যে অনায়াসে এক বর্তনী হতে অন্য বর্তনীতে ফ্রিকুয়েন্সি পরিবর্তণ ব্যাতিরেকে বৈদ্যুতিক এনার্জি স্থানান্তরিত করা যায়। এখানে লক্ষণীয় যে, এ প্রক্রিয়ায় কয়েলদ্বয়ের মধ্যে কোন প্রকার বৈদ্যুতিক সয়যোগ থাকে না, তবে কয়েলদ্বয় পরস্পরের সাথে চুম্বকীয়ভাবে (Magnetically) সংযুক্ত থাকে। বৈদ্যুতিক এনার্জি স্থানান্তরের সময় উভয় কয়েলে ভোল্টেজের পরিমান অবশ্যই কম শি হয় েএবং সে সঙ্গে সঙ্গে কয়েলদ্বয়ের কারেন্টের পরিমান ও এমন ভাবে বেশি-কম হয়ে থাকে, যাতে উভয় কয়েলের পাওয়ারের পরিমান প্রায় সমান হয়। ইহাই ট্রান্সফর্মারের বৈশিষ্ট্য। ট্রান্সফর্মারের কয়েলদ্বয় বেশ কাছকাছি অবস্থান করে যাতে এক কয়েলে উৎপন্ন ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স খুব সহজেই অন্য কয়েলের সাথে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট হতে পারে। ট্রান্সফর্মারে কোন ঘুরন্ত অংশ না থাকায় এতে ঘর্ণ ও বাতারে বাধাজনিত পাওয়ার লস হয় না । ফলে এর কর্মদক্ষতা যা ৯৫% হতে ৯৯% অন্যান্য বৈদ্যুতিক মেশিনের তুলনায় অনেক বেশি হয়। এছাড়া কয়েলগুলোকে উচ্চ গ্রেডের ইনসুলেটিং তেলের মধ্যে নিমজ্জিত করে ট্রান্সফর্মারকে ঠান্ডা রাকা যায় ও অতি উচ্চ মানের ভোল্টেজে কয়েলের ইসুলেশন নিরাপদ করা য়ায় । যেহেতু কয়েলদ্বায়ের মধ্যে কোন আপেক্ষিক গতিবেগ থাকে না , সেহেতু প্রথমায় আরোপিত ভোল্টেজের ফ্রিকুয়েন্সি যা থাকে দ্বিতীয়ার আবেশিত ভোল্টেজের ফ্রিকুয়েন্সি একই থাকে। উল্লেখিত বৈদ্যুতিক এনার্জি স্থানান্তরের সমগ্র প্রক্রিয়াই ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। বৈজ্ঞানিক মাইকেল ফ্যারাডে ১৮৩১ সালে এ নীতি আবিস্কার করেন।
Structure and operation of transformer:
Introduction: The contribution of transformers in the transmission and distribution system of electric power in today's world is immense. It is basically a Static device. With the help of this device, electrical energy can be transferred effortlessly from one circuit to another without changing the frequency. It should be noted here that in this process there is no electrical connection between the two coils, but the two coils are magnetically connected to each other. During the transfer of electrical energy, the amount of voltage in both the coils must be reduced and at the same time the amount of current in both the coils is more or less in such a way that the amount of power in both the coils is almost equal. This is the feature of transformer. The two coils of the transformer are located very close so that the magnetic flux generated in one coil can easily be partially or completely related to the other coil. As there is no rotating part in the transformer, it does not cause power loss due to rotation and wind. As a result, its efficiency is 95% to 99% much higher than other electric machines. In addition, immersing the coils in high-grade insulating oil can keep the transformer cool and secure the coil insulation at very high voltage. Since there is no relative velocity between the two coils, the frequency of the first applied vortex remains the same as the frequency of the induced voltage of the second. The whole process of transfer of electrical energy is based on the principle of electro-magnetic induction. The scientist Michael Faraday discovered this principle in 1831.
১.১ ট্রান্সফর্মারের সংজ্ঞা
ইহা এমন একটি ইলেকট্রিক্যাল স্ট্যাটিক ডিভাইস যার সাহায্যে ফ্রিকুয়েন্সি এবং পাওয়ারের পরিবর্তণ না করে কয়েলদ্বয়ের মধ্যে কোনরূপ বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়াই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন উপায়ে বৈদ্যুতিক এনার্জি এক বর্তনী হতে আরেক বর্তনীতে স্থানান্তরিত করা যায়।
একটি সাধারণ ধরণের ট্রান্সফর্মারে দু’টি কয়েল থাকে। যে কোন কয়েলে এনার্জি সাপ্লাই দেয়া যায়, আবার অনুরূপ ভাবে যে কোন কয়েলকে লোডে সংযোগ করা যায়। দু’টি কয়েলের মধ্যে যে কয়েলে এনার্জি সরবরাহ দেয়া হয় তাকে প্রাইমারি ওয়াইন্ডিং এবং অন্য কয়েলটি যা লোডের সাথে সংযুক্ত থাকে তাকে সেকেন্ডারি ওয়াইন্ডিং বলে। এজন্যই ট্রান্সফর্মারে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ওয়াইন্ডিং চিহ্নিত থাকে না। ট্রান্সফর্মারে হািই-ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং ও লো-ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং চিহ্নিত থাকে। হাই ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং H1,H2.......এবং লো-ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং X1, X2.......এভাবে চিহ্নিত থাকে। তাছাড়া হাই সাইজের বুশিং এর সাইজ লো-সাইড়ের তুলনায় বড় হয়ে থাকে। যখন কোন ট্রান্সফর্মার স্টেপ-আপ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তখন লো-ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং প্রাইমারি হিসাবে চিহ্নিত হয় ও উৎসের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ঠিক সেরূপ কোন ট্রান্সফর্মার স্টেপ-ডাউন হিসাবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে হাই ভোল্টেজ ওয়াইন্ডিং প্রাইমারি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে উৎসের সাথে সংযুক্ত করা হয়ে থাকে।
ক) স্টেপ-আপ ট্রান্সফর্মার:
যখন কোন ট্রান্সফর্মার অল্প ভোল্টেজে এনার্জি গ্রহন করে বেশি ভোল্টেজ সরবরাহ করে তখন তাকে স্টেপ-আপ ট্রান্সফর্মার বলে। স্টেপ-আপ ট্র্রান্সফর্মারে দ্বিতীয়া কুন্ডলীর প্যাচ সংখ্যা হতে বেশি হয় অর্থাৎ Ns > Np ও a < 1 হয়। হল ট্রান্সফর্মেশন রেশিও েএবং Np/Ns = a
খ) স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফর্মার:
যখন কোন ট্রান্সফর্মার যে কোন ভােল্টেজে এন্যার্জি গ্রহন করে এর চেয়ে কম ভোল্টেজ সরবরাহ করে তখন তাকে স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফর্মার বলে। স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফর্মারে প্রথমা কুন্ডলীর প্যাচ সংখ্যা দ্বিতীয়া কুন্ডলীর প্যাচ সংখ্যা হতে বেশি হয় অর্থ্যাৎ Np>Ns এবং এখানে a>1 হয়। যেখানে a হল ট্রান্সফর্মমেশন রেশিও এবং Np/Ns=a ।
1.2 ট্রান্সফরমারের কার্প্রণালী:-
ট্রান্সফরমারে একই ম্যাগনেটিক ফ্ল্যাক্সের অধীনে দু’টি সার্কিট বা কয়েল মিউচুয়াল ইন্ডাকশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট হয়। দুটি ইন্ডাকটিভ কয়েল উভয়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যতীত একটি অভিন্ন ল্যামিনেটেড কোরের সাথে চুম্বকীয়ভাবে সংযুক্ত আছে। কয়েলগুলো লো-রিল্যাকটেন্স ও উচ্চমানের মিউচুয়াল ইন্ডাকটেন্স বিশিষ্ট, কয়েল দু’টির মধ্যে এসি সোর্সের সাথে সংযুক্ত কয়েলকে প্রথমা কয়েল এবং লোডের সাথে সংযুক্ত কয়েলকে দ্বিতীয়া কয়েল বলা হয়।
No comments